অন্যান্য আসরের চেয়ে বেশ বিস্তৃত পরিসরে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় ২০২৬ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এমন টুর্নামেন্টে নিজেদের পছন্দের দল কেমন জার্সি পরে তা নিয়ে আগ্রহ থাকে ভক্তদের মাঝে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার জার্সি প্রস্তুতে অংশ নিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান ডিজাইনার সার্জিও মারেকো। ইতোমধ্যে সেই জার্সি উন্মোচনও করা হয়েছে।
এবার বেশ আগেভাগেই ২২টি দেশের জার্সি প্রকাশ করেছে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রীড়া সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস। তাদের অধীনে কর্মরত আছেন ব্রাজিলিয়ান ডিজাইনার মারেকো। স্বভাবতই আর্জেন্টিনার চিরাচরিত নকশা রাখা হয়েছে তাদের আসন্ন বিশ্বকাপ জার্সিতে। যেখানে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী আকাশি-সাদা ডোরাকাটা নকশা। এ ছাড়া আলবিলেস্তেদের শিরোপাজয়ী ১৯৭৮, ১৯৮৬ এবং ২০২২ তিন আসরে পরিহিত জার্সির সঙ্গে এর সমন্বয় করা হয়েছে।
বলা হচ্ছে– মহাতারকা লিওনেল মেসি শেষবার ২০২৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে তুলবেন। ফলে তাদের জন্য আসন্ন আসরের মর্যাদা কোনো অংশেই কম নয়। একইসঙ্গে লিওনেল স্কালোনির দলটি মাঠে নামবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে। ২০২৬ বিশ্বকাপে মেসিদের জন্য প্রস্ততকৃত জার্সি নিয়ে ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম গ্লোবো’র সঙ্গে কথা বলেছেন ডিজাইনার মারেকো। তার মতে– ‘প্রাথমিকভাবে আর্জেন্টিনার চ্যাম্পিয়ন হওয়া আসরে পরিহিত প্রতিটি জার্সি থেকে নীল রঙের শেড নতুন নকশায় ব্যবহৃত হয়েছে।’
ব্রাজিলিয়ান এই ডিজাইনার আরও বলেন, ‘আমরা আগের তিন জার্সির শেড সমন্বয় করেছি। ফলে নীল রঙের তিনটি ভিন্ন শেড–ই থাকবে আর্জেন্টিনার ২০২৬ বিশ্বকাপের জার্সিতে। স্ট্রাইপ ও গ্রেডিয়েন্টে আকাশী-সাদা রঙের ব্যবহার পুরোনো হলেও, মেসিদের নতুন জার্সিতে আধুনিকতার ছোঁয়া রাখার চেষ্টা করেছি। পুরো জার্সির নকশা আমি করিনি, বরং বড় দলের মাধ্যমে এই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ওই দলে আর্জেন্টাইনসহ ভিন্ন ভিন্ন জাতীয়তার লোকও ছিলেন। জার্সি প্রস্তুতে সবার বিবেচনায় ছিলেন মেসি, ২০২২ বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
ব্রাজিলিয়ান বৈশিষ্ট্য সর্বত্র ধারণ করলেও জার্সি ডিজাইনে তার প্রভাব থাকে না বলেও জানান মারেক, ‘সাধারণত ফুটবলে আমি আমার ব্রাজিলিয়ান বৈশিষ্ট্যটাই নিয়ে আসি, তবে কেবল জার্সিতে নয়। ব্রাজিলিয়ানদের নমনীয়তা বা মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতার দিকটাও আমার মাঝে আছে। হয়তো আমাদের নানা ব্যবহারিক বিষয় নিয়ে কথা হয়, কিন্তু আমি ব্রাজিলিয়ানদের সেই বাস্তব নমনীয়তাটাই পছন্দ করি। যা আমরা প্রয়োজনে উৎপাদনের কোনো সমস্যা সমাধানেও ব্যবহার করি। তবে জার্সির নকশা তৈরি পুরো দলের সম্মিলিত কাজ, যেখানে বিভিন্ন দেশের ডিজাইনার যুক্ত আছেন।’
আসন্ন বিশ্বকাপের অন্যতম আয়োজক মেক্সিকো। তাদের জার্সি সম্পর্কেও বিস্তারিত কথা বলেছেন মারেকো। তিনি বলেন, ‘মেক্সিকোর ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য ছিল অতীত থেকে সরে এসে একটি নতুন ও আধুনিক পরিচয় তুলে ধরা। একটি এমন জার্সি, যা মেক্সিকান সংস্কৃতিকে আধুনিকভাবে প্রকাশ করবে। আমরা কোনো রেট্রো বা অতীতনির্ভর ডিজাইন চাইনি, লক্ষ্য ছিল আধুনিক মেক্সিকোর প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা। তাদের সংস্কৃতি খুবই শক্তিশালী এবং তারা সব সময় সবুজ জার্সি প্রত্যাশা করে। যদিও ফেডারেশনের কিছুটা স্বাধীনতা আছে, তবে বিশ্বকাপ যখন মেক্সিকোতে, তখন জার্সি অবশ্যই সবুজ হতে হবে। সেই সঙ্গে জার্সিতে মেক্সিকোর পতাকার লাল-সাদা রঙও রাখা হয়েছে।’
S