বগুড়া শহর ও শেরপুর উপজেলার মোটরশ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে সোমবার সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন করতোয়া গেটলক পরিবহনের শ্রমিকরা। ফলে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে নামেনি একটিও বগুড়া শহরগামী বাস। যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন হাজারো যাত্রী, অসুস্থ রোগী থেকে শুরু করে অফিসগামী কর্মজীবী সবাই।
শেরপুর করতোয়া বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন বগুড়া শহরে যাতায়াত করে প্রায় ৪৫টি করতোয়া গেটলক বাস। এসব বাসে দৈনিক কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। হঠাৎ পরিবহন বন্ধ হয়ে পড়ায় সকাল থেকেই টার্মিনাল ও রাস্তাঘাটে যাত্রীদের ভিড় লেগেছে। অনেকেই বিকল্প যানবাহনে ছুটছেন শহরে।
জানা যায়, গত শুক্রবার সকালে বগুড়ার চারমাথা থেকে ছেড়ে আসা একটি বাস শেরপুর কোচ টার্মিনালে পৌঁছালে ঢাকাগামী যাত্রী তোলা নিয়ে স্থানীয় শ্রমিকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হলে ওই দিন সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের শ্রমিকেরা করতোয়া গেটলক পরিবহনের তিন শ্রমিককে মারধর করেন। পরদিন শনিবার উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা শহরের ট্রেনস্টেশন রোড থেকে করতোয়া গেটলকের ১৫টি বাস বের করে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শেরপুরের শ্রমিকেরা সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
হৃদ্রোগে আক্রান্ত ধুনট উপজেলার যুগিগাতী গ্রামের মেহেদী হাসান সকালে চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিলেও বাস বন্ধ থাকায় তিনি যেতে পারেননি। তিনি বলেন, জরুরি চিকিৎসার দরকার ছিল, কিন্তু এখন আর কিছুই করার নেই।
টার্মিনালের সামনে অপেক্ষমান তিন জন নারী জানান, আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার জন্য সকালে বের হয়েছিলেন, কিন্তু বাস না পেয়ে শেষে বাধ্য হয়ে তিন চাকার গাড়িতে উঠতে হয়েছে তাদের।
বগুড়াগামী যাত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গেটলক বাসে ভাড়া ৩০ টাকা, এখন সিএনজিতে যেতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। কিন্ত যাত্রী বেশি হওয়ায় সিএনজিও পাওয়া যাচ্ছে না।
বগুড়া জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ ও মাইক্রোবাস পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের শেরপুর কার্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, বগুড়া ও শেরপুর শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার মীমাংসা না হওয়ায় আমরা কর্মবিরতিতে গেছি। প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার যাত্রী এই রুটে চলাচল করে।
S