গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন ও সুমুদ ফ্লোটিলার মানবাধিকার কর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। এতে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের সদস্য সচিব সিকান্দার আলি মিনা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাকিল আকতার চৌধুরীসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা অংশ নেন।
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ মানবাধিকার কর্মীর সুমুদ ফ্লোটিলা অভিযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছে। অত্যন্ত সুশৃঙ্খল এবং আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার বিধিমালা মেনে মানবাধিকার কর্মীরা গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের প্রধানদের সমস্ত নিবেদন উপেক্ষা করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ফ্লোটিলাগুলোকে অপহরণ করেছে। মানবাধিকার কর্মীদেরকেও গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি বলেন, জাহাজগুলোতে নেতৃত্বদানকারী তরুণ মানবাধিকার কর্মী, পরিবেশকর্মীরসহ বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন ফটোগ্রাফার এবং মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলম। তাদের মধ্যে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুধু শ্রমিকদের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামি না। শ্রমিকরা সবসময় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। ইতালির ডগ শ্রমিকরা আন্দোলন করে ইতালি থেকে ইসরায়েল যে অস্ত্র সরবরাহ হয় এবং যে সব জিনিসপত্র রপ্তানি হয় সেগুলো উত্তোলন করা বন্ধ করে দিয়েছে। সুতরাং মানবাধিকার আন্দোলন শ্রমিক আন্দোলনের একটি অংশ। মানবাধিকার লঙ্ঘন যেখানেই হবে, আমরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করবো— এটাই হচ্ছে আমাদের অঙ্গীকার।
বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাকিল আকতার চৌধুরী বলেন, ফিলিস্তিনে যে বর্বরতা চালানো হচ্ছে এটার সঙ্গে শুধু ইসরায়েলীরা জড়িত নয়, এর সঙ্গে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরাও রয়েছে। তাদেরকেও বর্বরতার দায় বহন করতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, গাজা মানব হত্যা কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। সেখানে ২২ লাখ মানুষের মধ্যে তিন লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। জাতিসংঘ বলছে— দৈনিক একজন মানুষ যে পরিমাণ খাবার খাওয়া প্রয়োজন, সেটির মাত্র ২৬ শতাংশ খাবার তারা খেতে পারছে। এভাবে দুবছর ধরে চলছে। এ রকম একটা জায়গায় মানবাধিকার কর্মীরা খাদ্য, পানি এবং ওষুধ নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ইসরায়েল তাদের আটকে দিয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা জানান, বিশ্বজুড়ে যেমন প্রতিবাদ চলছে, বাংলাদেশেও শ্রমিকরা সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে থাকবেন।
s