আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলি অবরোধে ক্ষুধা-শীতে বিপর্যস্ত গাজার ফিলিস্তিনিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Published
1 week agoon
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি অবরোধে ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ কমেনি। ক্ষুধা, ঠান্ডা, চিকিৎসা সংকট আর অব্যাহত হামলার ভয়— সব মিলিয়ে গাজা এখন এক মানবিক বিপর্যয়ের নাম।
সোমবার (৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় ইসরায়েলের হামলা থামেনি। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এক মাসে অন্তত ২৩৬ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৬০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায়ই তিনজনের মৃত্যু ও ধসে পড়া ভবন থেকে আরও তিনজনের মরদেহ উদ্ধারের খবর দিয়েছে গাজার হাসপাতালগুলো। এর মধ্যে একজন আগের হামলায় আহত হয়ে মারা যান।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ধসে যাওয়া বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৫০০ ফিলিস্তিনির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা সবাই ইসরায়েলের দুই বছরের টানা বোমাবর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞের শিকার।
রোববার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানায়, রেডক্রসের মাধ্যমে তিনজন ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ ফেরত আনা হয়েছে। যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, প্রতিটি ইসরায়েলি বন্দির মরদেহের বিনিময়ে ইসরায়েলকে ১৫ জন করে মৃত ফিলিস্তিনি বন্দির মরদেহ ফেরত দিতে হবে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) সম্প্রতি অভিযোগ করে, হামাস দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ত্রাণবাহী ট্রাক লুট করেছে। তবে তারা কোনো প্রমাণ দেয়নি। একটি ড্রোন ফুটেজের বরাত দিয়ে দাবি করা হয়, ‘হামাস সদস্যরা’ মানবিক সহায়তা দখল করে নিয়েছে।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগ। এটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে কলঙ্কিত করার জন্য চালানো পরিকল্পিত প্রচারণা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে সহায়তা সরবরাহে বাধা দিচ্ছে, যাতে ক্ষুধা তৈরি করে গাজায় মানবিক বিপর্যয় ঘটানো যায়।”
এদিকে ইসরায়েলি অবরোধে গাজার হাসপাতালগুলো ভীষণ সংকটে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাব অনুযায়ী, বিশেষায়িত চিকিৎসার প্রয়োজন এমন ১৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি রোগী এখনো গাজায় আটকা রয়েছেন।
জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার আহত ফিলিস্তিনিকে চিকিৎসার জন্য গ্রহণ করেছে মিসর। সংযুক্ত আরব আমিরাত নিয়েছে ১ হাজার ৪৫০ জন, কাতার ৯৭০ জন ও তুরস্ক ৪৩৭ জন। ইউরোপে সবচেয়ে বেশি চিকিৎসা দিয়েছে ইতালি— ২০১ জনকে। তবে এখনো ৩ হাজার ৮০০ শিশুসহ হাজারো মানুষ বিদেশে চিকিৎসার অপেক্ষায় আছেন।
এছাড়া শীত ঘনিয়ে আসায় গাজার বাস্তুচ্যুত মানুষরা টিকে থাকার শেষ চেষ্টা করছেন। ইসরায়েলের নির্মাণসামগ্রী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেকেই কাদামাটির ঘর বানিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন।
গাজা সিটির বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী খালেদ আল-দাহদুহ আল জাজিরাকে বলেন, “শীত আসছে, তাই কিছুটা আশ্রয় তৈরি করার চেষ্টা করেছি। তাঁবু নেই, সিমেন্ট নেই— তাই ধ্বংসস্তূপের ইট আর কাদা দিয়ে অস্থায়ী ঘর বানিয়েছি। অন্তত ঠান্ডা, পোকা আর বৃষ্টি থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়।”
তার আত্মীয় সাইফ আল-বায়েকও একইভাবে চেষ্টা করলেও উপকরণ না থাকায় ঘর সম্পূর্ণ করতে পারেননি। তিনি বলেন, “পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যতটুকু পাথর পেয়েছি তা দিয়েই কাদার দেয়াল তুলেছি। কিন্তু ছাদ অসমান, ফাঁকফোকর দিয়ে পানি ঢোকে।”
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) গাজা প্রতিনিধি আলেসান্দ্রো ম্রাকিচ বলেন, “নির্মাণসামগ্রীর অভাবে মানুষকে প্রাচীন পদ্ধতিতে আশ্রয় গড়তে হচ্ছে। এটি তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র উপায়।”
সহায়তা সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, তাপমাত্রা কমতে থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ক্ষুধা, ঠান্ডা আর অনিশ্চয়তায় গাজার মানুষ এখনো মৃত্যুভয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
S
You may like
-
নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবেন স্টারমার
-
‘বোরকা না পরলে নারীদের চিকিৎসা নয়’— আফগানিস্তানে ফের বিতর্কিত নির্দেশ
-
আফগানিস্তানে ফের হামলার হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের
-
নয়াদিল্লিতে বিস্ফোরণ: পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র
-
‘গাজা স্থিতিশীলকরণ বাহিনী’তে যোগদান নিয়ে নেতিবাচক আমিরাত
-
পবিত্র কোরআনের কসম, বিজেপির সঙ্গে আঁতাত করিনি: ওমর আবদুল্লাহ
আন্তর্জাতিক
নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবেন স্টারমার
Published
2 hours agoon
নভেম্বর ১২, ২০২৫
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারের নেতৃত্ব নিয়ে লেবার এমপিদের পক্ষ থেকে কোনো চ্যালেঞ্জ ছোড়া হলে তার বিরুদ্ধে তিনি লড়বেন বলে স্পষ্ট করেছেন তার মিত্ররা।
স্যার কিয়ার স্টারমারের প্রতি অনুগতদের মধ্যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে তার পদ হয়তো হুমকির মুখে পড়তে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী পাক্ষিকের বাজেট ঘোষণার পরপরই এই সংকট দেখা দিতে পারে।
সমালোচকরা বলছেন, এই অবস্থা প্রমাণ করে যে, ডাউনিং স্ট্রিট এখন ‘সম্পূর্ণরূপে প্রতিরক্ষামূলক অবস্থায় রয়েছে’ যেটি ‘বর্তমান সরকারকে সংকট মোকাবিলায় কোনোভাবেই সাহায্য করবে না।’
স্যার কিয়েরকে সরানোর জন্য একটি নেপথ্য ষড়যন্ত্র চলছে মনে করে গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তার বন্ধুরা। নেতৃত্ব পরিবর্তনের যে গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে সেটিও তারা সবাইকে পরিষ্কারভাবে জানাতে চাইছেন।
এদিকে স্যার কিয়েরকে সরিয়ে দেওয়ার পর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে লেবার এমপিরা যেসব নাম নিয়ে আলোচনা করেছেন তাদের মধ্যে তার ঘনিষ্ঠতম মন্ত্রিসভার কয়েকজন সহযোগী বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিং এবং স্বরাষ্ট্র সচিব শাবানা মাহমুদ রয়েছেন।
কেউ কেউ ধারণা করছেন, এনার্জি সেক্রেটারি অ্যাড মিলিব্যান্ড এবং সাবেক পরিবহন সচিব লুইস হেইগসহ কয়েকজন ব্যাকবেঞ্চারও নেতৃত্বের প্রতি আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছে। এক মন্ত্রী বলেন, “তিনি (স্টারমার) লড়বেন।”
২০২১ সালের গুরুত্বপূর্ণ উপ-নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। যে নির্বাচনে লেবার পার্টি কনজাভেটিভদের কাছে হেরে যায়। স্যার কিয়ের স্টারমার সেসময় নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন।
তিনি বলছেন, “তিনি জীবিত থাকা মাত্র দুইজন মানুষের একজন যিনি লেবার পার্টির হয়ে জাতীয় নির্বাচনে জয় পেয়েছেন। মাত্র ১৭ মাস পর তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বোকামি।”
লেবার পার্টির অনেকেই মনে করছেন, আগামী মে মাসে স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসের বিকেন্দ্রীকৃত নির্বাচন এবং ইংল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় নির্বাচনের পর সরকার একটি বড় সংকটের মুখে পড়তে পারে।
এই নির্বাচনের ফলাফল ভালো নাও হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে দলটির কেউ কেউ এমন আশঙ্কাও করছেন নেতা পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করার জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত না।
নিজেদের বিরুদ্ধে যে সম্ভাব্য হুমকি এখন ঘনিয়ে আসছে এ বিষয়ে ডাউনিং স্ট্রিটও অবগত। একজন জ্যেষ্ঠ লেবার এমপি বলেন, “স্থানীয় নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে বলাটা যতই ভালো শোনাক না কেন, আসলে আমি আমার কর্মী-সমর্থকদেরই সংঘর্ষে পাঠাচ্ছি। আমি আমার সব কাউন্সিলর হারাতে পারি না।”
লেবার পার্টির আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, “বাজেটের পর মানুষকে পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করার কারণগুলোর তালিকা প্রতিদিনই বাড়ছে। যদি ওয়েস সাহসী হন এবং পদক্ষেপ নেন তাহলে বড়দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পুরস্কার পেতে পারেন তিনি।”
প্রধানমন্ত্রীর অনুগতরা ওয়েস স্ট্রিটিং এর উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে বিশেষ সন্দেহের চোখে দেখছেন। স্ট্রিটিং এর একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, “এই দাবিগুলো সম্পূর্ণরূপে অসত্য।”
তিনি আরও বলেন, “ওয়েসের মনোযোগ সম্পূর্ণভাবে এখন ১৫ বছরে প্রথমবারের মতো অপেক্ষমাণ রোগীর সংখ্যা কমানো, দুই হাজার পাঁচশো নতুন জিপি (চিকিৎসক) নিয়োগ এবং যে এনএইচএস তার জীবন বাঁচিয়েছিল সেটিকে পুনর্গঠন করা।”
বুধবার সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কয়েকটি সাক্ষাৎকার দেওয়ার কথা রয়েছে। যেখানে তার ইংল্যান্ডের এনএইচএস সংস্কার পরিকল্পনা নিয়েই কথা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
এক সরকারি সূত্র জানায়, “ডাউনিং স্ট্রিট এখন সম্পূর্ণ প্রতিরক্ষামূলক (বাঙ্কার মোড) অবস্থায় চলে গেছে। সম্পূর্ণভাবে কোনো কারণ ছাড়াই সবচেয়ে অনুগত মন্ত্রিসভার সদস্যদের থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।”
এই সূত্রটি আরও জানায়, “দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, স্যার কিয়েরের দল বারবার নিজের লোকদের বিরুদ্ধেই সংবাদমাধ্যমে তথ্য দিচ্ছে। আগে অ্যাঞ্জেলা, লিসা, লুসির বিরুদ্ধে করেছিল, এবার ওয়েসের পালা।”
আরেক সরকারি সূত্র বলেন, “এভাবে নিজেদের মধ্যে সংঘাত বাঁধানো (‘সার্কুলার ফায়ারিং স্কোয়াড’) সরকারকে বর্তমান বিপদ থেকে উদ্ধার করবে না।”
লেবার এমপিরা যা চাইছে তার জন্য সতর্ক হওয়া উচিত বলে প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকরা সতর্ক করে দিয়েছেন।
তাদের যুক্তি হলো, নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা দলকে এমন এক বিশৃঙ্খলার মধ্যে ফেলবে যা কনজারভেটিভ পার্টির শাসনের শেষ বছরগুলোতে দেখা গিয়েছিল এবং যা গত বছর শেষ হয়েছিল। একই সঙ্গে এটি এমন একজন নেতাকে প্রতিষ্ঠিত করবে যার নিজের দেশের জনগণের কাছ থেকে সরাসরি কোনো ম্যান্ডেট থাকবে না।
এ ধরনের প্রতিযোগিতা আন্তর্জাতিক বাজারকেও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিষ্ঠিত সুসম্পর্ককে বিপন্ন করবে বলে সহকর্মীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছে তারা।
কিন্তু কয়েকজন মন্ত্রীসহ অনেকেই সরকার বর্তমানে যে পরিস্থিতিতে রয়েছে সেটিকে চরম হতাশাজনক পরিস্থিতি বলে মনে করছেন।
একজন মিনিস্টার বলেন, “এটা ভয়াবহ। মানুষ তাকে (স্টারমার) ঘৃণা করছে। করবিনের শাসনামলের চেয়েও এটা আরো খারাপ। মে মাসের মধ্যে এই পরিস্থিতি কীভাবে টেকসই হবে আমি তা বুঝতে পারছি না।”
জনমত জরিপ থেকে জানা যায়, স্যার কিয়ের ব্যাপকভাবে অজনপ্রিয়। এমনকি আধুনিক জনমত জরিপের ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে অজনপ্রিয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীও। এই জরিপগুলোতে আরো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লেবার পার্টির ভোটারদের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ সমর্থন ধরে রাখতে পেরেছে।
প্রধানমন্ত্রীর সমর্থক এক মন্ত্রিসভা সদস্য তাদের সহকর্মীদের মনোভাবকে এভাবে সংক্ষেপে তুলে ধরেছেন: “অনেকে মনে করেন এটি লেবার সরকারের ও পরিপূর্ণতার মধ্যে একটি পছন্দ। যতটা তারা আমাদেরকে তাদের কাছে নিখুঁত বলে মনে হওয়া নীতির দিকে ঠেলে দিতে পারেন, ততটাই তারা খুশি হন। কিন্তু আসল পছন্দ আমাদের আর পরিপূর্ণতার মধ্যে নয়, বরং আমাদের আর রিফর্ম পার্টির মধ্যে।”
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রিফর্ম ইউকে দলের উত্থান ডাউনিং স্ট্রিটের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, রিফর্ম ইউকে দলের নেতা নাইজেল ফারাজের সঙ্গে লেবার দলের এই লড়াই প্রজন্ম নির্ধারণী এক লড়াই।
তিনি মনে করেন, সাধারণ নির্বাচনে রিফর্মের কাছে পরাজিত হওয়া কনজারভেটিভদের কাছে হারের চেয়েও অনেক বেশি ভয়াবহ হবে।
ফারাজের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হওয়ার মতো শক্তি ও সামর্থ্য তার এখনও রয়েছে বলেও বিশ্বাস করেন তিনি। কিন্তু তার অনেক সহকর্মী এটা বিশ্বাস করেন না। গত বছর নির্বাচিত এক লেবার এমপি বলেন, আমরা টোরিদের মতো নই। আমরা এক সংসদীয় মেয়াদে একবারের বেশি নেতা পরিবর্তন করব না। বিবিসি বাংলা
S
আন্তর্জাতিক
‘বোরকা না পরলে নারীদের চিকিৎসা নয়’— আফগানিস্তানে ফের বিতর্কিত নির্দেশ
Published
7 hours agoon
নভেম্বর ১২, ২০২৫
আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হেরাতে নারী রোগী, সেবিকা ও কর্মীদের হাসপাতালে প্রবেশের আগে বোরকা পরার নির্দেশ দিয়েছে কট্টর-উগ্রপন্থি গোষ্ঠী তালেবান প্রশাসন।
এমন তথ্যই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ)। সংস্থাটি জানিয়েছে, গত ৫ নভেম্বর থেকে এ নির্দেশ কার্যকর হয়েছে।
এমএসএফ জানিয়েছে, তালেবানের জারি করা এই নির্দেশনা নারীদের চিকিৎসা গ্রহণের পথে বড় বাধা সৃষ্টি করেছে এবং জরুরি রোগী ভর্তি ২৮ শতাংশ কমে গেছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এমএসএফের আফগানিস্তান বিষয়ক প্রোগ্রাম ম্যানেজার সারা শাতো বিবিসিকে বলেন, “এই নতুন বিধিনিষেধ নারীদের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলেছে এবং স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা তৈরি করছে।”
তিনি বলেন, এমনকি জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন থাকা নারী রোগীরাও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
তবে তালেবান সরকারের এক মুখপাত্র এমএসএফের দাবি অস্বীকার করেছেন। যদিও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগের পর কিছু এলাকায় বিধিনিষেধ আংশিক শিথিল করা হয়েছে।
সংস্থাটি জানায়, হেরাত আঞ্চলিক হাসপাতালে তাদের পেডিয়াট্রিক সেবায় নতুন নিয়ম চালুর পর জরুরি রোগী ভর্তি ২৮ শতাংশ কমে গেছে।
সারা শাতো বলেন, তালেবান সদস্যরা হাসপাতালে প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে বোরকা না পরা নারীদের ভেতরে যেতে বাধা দিচ্ছেন। বোরকা এক ধরনের পোশাক যা মুখ ও শরীর পুরোপুরি ঢেকে রাখে, শুধু চোখের সামনে জালের মতো পাতলা অংশ থাকে দেখার জন্য।
তালেবানের ‘নৈতিকতা ও পাপ প্রতিরোধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের’ মুখপাত্র সাইফুল ইসলাম খাইবার দাবি করেন, “এ ধরনের খবর পুরোপুরি মিথ্যা। মন্ত্রণালয়ের অবস্থান সাধারণত হিজাব পরিধান নিয়ে, বোরকা নয়।”
তিনি বলেন, আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে “হিজাবের ব্যাখ্যা ভিন্ন” এবং অনেক ক্ষেত্রেই তা শরিয়া আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
অন্যদিকে মানবাধিকারকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, তালেবানের নিরাপত্তাকর্মীরা গত এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে প্রবেশকারী নারীদের বোরকা পরতে বাধ্য করছেন। এমনকি এটা শুধু হাসপাতালেই নয়— স্কুল, সরকারি দপ্তর ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও তারা এই কাজ করছেন।
হেরাতের এক নারী অধিকারকর্মী বিবিসিকে বলেন, “হাসপাতাল, স্কুল কিংবা সরকারি অফিসে যেতে হলে এখন নারীদের বোরকা পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এক আফগান কর্মী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। ওই ভিডিওতে কিছু নারীকে বোরকা পুড়িয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা যাচ্ছে। তবে ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
১৯৯০-এর দশকে প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালীনও তালেবান নারীদের জন্য বোরকা বাধ্যতামূলক করেছিল। আর ২০২১ সালের আগস্টে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তারা নারীদের ওপর ধারাবাহিকভাবে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে চলেছে। ২০২২ সালে নারীদের জন্য সম্পূর্ণ মুখঢাকা পোশাক পরিধানের নির্দেশনা জারি করা হয়। যদিও সেসময় সেটিকে ‘পরামর্শ’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল তালেবান।
তবে এমএসএফ জানায়, এবারই প্রথম হেরাতে এই নির্দেশ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে। সারা শাতো বলেন, “গত কয়েক দিনে হাসপাতালে বোরকা পরা নারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।”
বর্তমানে নারীদের বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। এছাড়া দেশটিতে মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষাও বন্ধ রয়েছে। জাতিসংঘ এই অবস্থাকে “লিঙ্গভিত্তিক বর্ণবৈষম্য” হিসেবে বর্ণনা করে বারবার এর অবসান দাবি করেছে।
S
আফগানিস্তানে আবারও হামলা চালাতে পারে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার পর এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটি।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তান আফগানিস্তানের ভেতরে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারে। তিনি আফগান তালেবান সরকারকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, পাকিস্তানে হামলার পেছনে থাকা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে তারা।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত দুই দিনে পাকিস্তানে দুটি বড় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর একটি দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের ওয়ানা ক্যাডেট কলেজে, আরেকটি রাজধানী ইসলামাবাদে। এই ঘটনায় দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু অস্ত্রধারী দেশটিতে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
পরে জিও নিউজের ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথ’ অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, এই হামলাগুলোর পর সীমান্ত পার হয়ে আফগানিস্তানের ভেতরে অভিযান চালানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তিনি আফগান তালেবান সরকারের হামলার নিন্দাকে “অবিশ্বাসযোগ্য” বলে প্রত্যাখ্যান করেন। আসিফ বলেন, “তালেবানের আশ্রয়ে থাকা গোষ্ঠীগুলোই বারবার আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।”
পাকিস্তানের এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ভারত বা আফগানিস্তান কেউই যদি দুঃসাহস দেখায়, পাকিস্তান সমান জবাব দেবে। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান কখনো আগ্রাসন শুরু করবে না। তবে আমাদের ওপর কোনো হামলা হলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
ইসলামাবাদের আত্মঘাতী বিস্ফোরণে অন্তত ১২ জন নিহত এবং ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
এর আগে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে খাজা আসিফ লিখেছিলেন, “আমরা এক ধরনের যুদ্ধের মধ্যে আছি। যারা মনে করছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী শুধু সীমান্ত এলাকায় লড়ছে, ইসলামাবাদের এই আত্মঘাতী হামলাই তাদের চোখ খুলে দেওয়ার মতো।”
তিনি বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী এই লড়াই সমগ্র পাকিস্তানের যুদ্ধ, আর সেনাবাহিনীর ত্যাগই জাতিকে নিরাপত্তা বোধ দিচ্ছে।
এছাড়া হামলার পর এক বিবৃতিতে তিনি আফগান তালেবান সরকারের সঙ্গে আলোচনার সাফল্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। আসিফ লেখেন, “কাবুলের নেতৃত্ব চাইলে পাকিস্তানে সন্ত্রাস রোধ করতে পারে। কিন্তু ইসলামাবাদে হামলার বার্তা এসেছে কাবুল থেকেই।”
রাজধানীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, পাকিস্তান আগেই এমন হামলার আশঙ্কা করেছিল। ইসলামাবাদের সন্ত্রাসী হামলা আমাদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে— “তোমাদের সব অঞ্চলই আমাদের নাগালের মধ্যে”।
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান সীমান্ত বা শহর— কোথাও সন্ত্রাস সহ্য করবে না এবং প্রতিটি হামলার শক্ত জবাব দেওয়া হবে।
S
মিস ইউনিভার্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা কে এই মিথিলা?
লকডাউনে আতঙ্কের কিছু নেই, ৫০০ টাকায় স্লোগান দিচ্ছে নিরীহ রিকশাওয়ালা
