বগুড়া
বগুড়ায় বিয়ের তুলনায় বেড়েছে তালাক, ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর মানসিক বিকাশ
ডিজিটাল দর্পণ ডেস্ক
Published
3 weeks agoon
বগুড়ায় বিয়ের পর সংসার টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতি বছর যত বিয়ে হচ্ছে, তার প্রায় অর্ধেকই শেষ হচ্ছে তালাকে। পরকীয়া, মাদকাসক্তি, যৌতুকের দ্বন্দ্ব, মতের অমিল, পারিবারিক অশান্তি ও আয়-ব্যয়ের বিরোধ—সব মিলিয়ে নতুন সংসারগুলো ভাঙনের মুখে পড়ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুদের মানসিক বিকাশ এবং বাড়ছে সামাজিক অস্থিরতা।
বগুড়া জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে জেলার ১২ উপজেলায় নতুন বিয়ে নিবন্ধিত হয়েছে ৮০ হাজার ৫২৭টি, আর একই সময়ে তালাক হয়েছে ৩৮ হাজার ৪০৮টি। এর মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিয়ে ১৬৬৪৫টি ও তালাক ৭৮৫৫টি, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিয়ে ১৪৮৯০টি ও তালাক ৬৮৩০টি, ২০২১-২২ অর্থবছরে বিয়ে ১৫০৮০টি ও তালাক ৭৩৫৫টি, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিয়ে ১৫০৮০টি ও তালাক ৭৩৫৫টি।
পরিসংখ্যান বলছে, তালাকের আবেদনকারীদের মধ্যে নারীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামে তালাকের হার সবচেয়ে বেশি। গ্রামাঞ্চলে মূলত স্বামীদের মাদক সেবন ও জুয়ায় আসক্তি সংসার ভাঙনের বড় কারণ।
চিকাশী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজি মো. সুজন মিয়া বলেন, অনেক স্বামী জুয়ায় আসক্ত হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। এরপর সংসারের ব্যয় বহন করতে না পারায় সম্পর্ক ভেঙে যায়। আর শহরাঞ্চলে অহংবোধ, পরকীয়া, নারীদের অতিরিক্ত জেদ ও সম্পর্কের টানাপোড়েনই বিচ্ছেদের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
বগুড়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাসরিন জাহান জেরিন বলেন, নেশা ও পরকীয়া এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পাশাপাশি নারীরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন, এতে ইতিবাচক দিক যেমন আছে, তেমনি কখনো অহংবোধও জন্ম নিচ্ছে, যা দাম্পত্য সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে।
শিশু আদালতের পিপি ও সমাজকর্মী সুফিয়া বেগম বলেন, বাবা-মার বিচ্ছেদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় সন্তানের। সে হয় মায়ের কাছে থেকে বাবাকে হারায়, নয়তো বাবার কাছে থেকে মায়ের স্নেহ পায় না। এতে শিশুর মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
বগুড়া জেলার সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল হান্নান বলেন, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, পারিবারিক বন্ধন দুর্বল হওয়া, যৌথ পরিবারের অভাব এবং নারীর আর্থিক স্বাধীনতা—সব মিলিয়েই তালাকের হার বেড়েছে।
বগুড়া জেলা রেজিস্ট্রার সিরাজুল করিম বলেন, নারীরা এখন আগের চেয়ে অনেক সচেতন। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানেন, তাই তালাকের ঘটনাও বাড়ছে। তবে সংসার ভেঙে গেলে সন্তানের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি সহনশীলতা ও ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকা জরুরি।
সুশীল সমাজের মতে, সম্পর্ক রক্ষায় স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া ও সহমর্মিতা বাড়াতে হবে। ধর্মীয় মূল্যবোধ, পারিবারিক ঐক্য ও সামাজিক বন্ধনকে পুনরুজ্জীবিত করতে না পারলে এই প্রবণতা রোধ করা সম্ভব হবে না।
বগুড়ায় প্রতি দুটি নতুন বিয়ের একটি ভেঙে যাচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি শুধু পারিবারিক নয়, সামাজিক সংকটের ইঙ্গিত। সম্পর্কের টানাপোড়েন, মাদকাসক্তি ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ না হলে এই প্রবণতা ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ আকার নিতে পারে।
S
You may like
-
এপেক্স’র নতুন সভাপতি নুরুল, সেক্রেটারী সাইফুল
-
বগুড়ায় জামায়াতের মানববন্ধন
-
বগুড়ায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত
-
বগুড়ায় ব্র্যাক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় জয়পুরপাড়ায় গণিত ও বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত
-
বগুড়ায় পূজার ছুটিতে গ্রামে যাওয়ার পথে একই পরিবারের তিনজন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত
-
বগুড়ার শেরপুরে সোনালী ব্যাংকের উদ্যোগে কৃষি ঋণ বিতরণের মহাক্যাম্প অনুষ্ঠিত
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি মো: রেজাউল করিম বাদশা ও দৈনিক বগুড়ার সম্পাদক ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বুধবার বিকেলে তাকে দেখতে হাসপাতালে যান বগুড়া শহর জামায়াতের আমীর ও বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা আবিদুর রহমান সোহেল।
এ সময় তার সাথে ছিলেন শহর জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আলমগীর হুসাইন, প্রচার সম্পাদক অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন সহ জামায়াত নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ রেজাউল করিম বাদশার চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন ও রোগ মুক্তি কামনা করে মহান আল্লাহর রহমত কামনা করেন। অপরদিকে, রেজাউল করিম বাদশার রোগ মুক্তি কামনা করেছেন জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও দৈনিক সাতমাথা পত্রিকার সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন।
S
বগুড়া
বগুড়া-৫ আসনের এমপি পদপ্রার্থী দবিবুর রহমান সড়ক দুর্ঘটনায় আহত
Published
2 days agoon
নভেম্বর ১১, ২০২৫
জামায়াতে ইসলামী মনোনীত বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের এমপি পদপ্রার্থী আলহাজ্ব দবিবুর রহমান সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে শেরপুর ডিজে হাইস্কুলের সামনে নির্বাচনী প্রচারণার কাজে বের হওয়ার সময় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি।
স্থানীয় লোকজন দ্রুত এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। পরে চিকিৎসা শেষে তিনি বর্তমানে নিজ বাসায় বিশ্রামে রয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর দবিবুর রহমান তাঁর দ্রুত আরোগ্য ও সুস্থতার জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন।
ইমি
বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে উৎসবমুখর পরিবেশে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধকে বরণ করেছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। মীর স্নিগ্ধকে স্বাগত জানাতে রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় শিবগঞ্জের মীর মুগ্ধ স্কয়ারে ছাত্র–জনতা সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা ও পৌর বিএনপি।
সমাবেশস্থলে পৌঁছালে ঐতিহাসিক মহাস্থানগড় থেকে মিছিল ও মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার মাধ্যমে হাজারো তরুণ-যুবক স্নিগ্ধকে বরণ করে নেন। পাঁচ শতাধিক মোটরসাইকেলের বহর ও বিএনপি সমর্থিত জনতার উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মীর শাহে আলম।
সমাবেশে মীর স্নিগ্ধ বলেন, পুণ্যভূমি শিবগঞ্জের মহাস্থান থেকে আমার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। খুন ও দমন পীড়নের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে। আমার ভাইসহ হাজারো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে সবচেয়ে বেশি বিএনপি। ছোটবেলা থেকেই আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছি। সেই আদর্শেই আজ বিএনপিতে যোগ দিয়েছি।
মীর স্নিগ্ধ বলেন, ভাইয়ের মৃত্যুর পর সরকার পক্ষ থেকে ব্ল্যাংক চেকের প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা কোনোদিন অন্যায়ের সাথে আপস করিনি, করবও না। দেশে খুন ও দমননীতির দায়ে দায়ীদের বিচার একদিন হবেই।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নে জুলাইযোদ্ধাসহ সারা দেশের তরুণ-যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা চিরতরে বিলুপ্ত করা হবে।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মীর শাহে আলম বলেন, বিএনপি জুলাই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় শক্তি। শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই মীর স্নিগ্ধের বিএনপিতে যোগদান সেই শক্তিকে আরও দৃঢ় করেছে।
S
দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে হলে নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প : মির্জা ফখরুল
পূর্ব-পশ্চিম দুই ফ্রন্টেই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত পাকিস্তান
